খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার ২৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ২২ জনই বাকশালের ছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১৫ আগস্টের সময় জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু ১৫ আগস্ট রাত পর্যন্ত যারা মন্ত্রী ছিলেন তারা গিয়ে শপথ নিলেন খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায়। খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার ২৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ২২ জনই বাকশালের মন্ত্রী ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশালের যে মন্ত্রিসভা ছিল সেই মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা মোস্তাকের মন্ত্রিসভায় শপথ নিলেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর তিনজন প্রধান খন্দকার মোশতাকের কাছে গিয়ে আনুগত্য করলেন। জিয়াউর রহমান তো জাননি।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ৭১ আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে বাকশাল, দুর্ভিক্ষ- শুধু এগুলোই আছে। তাদের ইতিহাসে আছে বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, মানুষ হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা। তার জন্য বিএনপির প্রতি তাদের এত বিদ্বেষ।
তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান এদেশের রাজনীতি ও প্রশাসনের ক্ষমতায় আবির্ভূত হন। তারপর আওয়ামী লীগ যত অপকর্ম করেছে সেখান থেকে শুভ দিক যেটা সেখানে তিনি দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে আর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে, জিয়াউর রহমান তা খুলে দিয়েছে। এই যে পার্থক্যটা একটি ইতিবাচক, ন্যায়ের পক্ষে গণতন্ত্রের পক্ষে। আর তাদের কাজ হচ্ছে শুধু হত্যা। শুধু মানুষ হত্যা নয়, বিরোধী দল হত্যা, গণতন্ত্র হত্যা। স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো গণতন্ত্র সেটাকে তারা হত্যা করেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জিয়া পরিবার, বিএনপিকে তারা কিছুই মনে করে না। এমন যে, বিএনপি নাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা সমালোচনা করার সময় কিন্তু জিয়া পরিবার ও বিএনপিকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল সত্তরের নির্বাচনে। যেসব কারণে সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল জনগণ, তার প্রত্যেকটার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে দলটি। একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছে কিন্তু নেতৃত্ব দেয়নি তারা। সেটি ঢাকার জন্য তারা জিয়া পরিবারের সমালোচনা করে। যুদ্ধে পুরো দেশ, জনগণ তাদেরকে ভোট দিয়েছে, তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা কিন্তু তারা নেতৃত্বে ছিল না। স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন সেনাবাহিনীর একজন মেজর। এজন্যই জিয়া পরিবারের প্রতি, জিয়াউর রহমানের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ, এত জ্বালা।
Leave a Reply